
ই কমার্স ওয়েবসাইট
প্রথমে জেনে নেওয়া যাক, ই কমার্স ব্যবসা কি? e-commerce শব্দের অর্থ হলো ইলেক্ট্রনিক বাণিজ্য। অর্থাৎ, ইন্টারনেট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে যে ব্যবসা করা হয়, তাকে ই কমার্স বলে। সুতরাং, আপনার বাসার নিচে চায়ের দোকান দিয়ে সেখানে, টিভিতে “তু চিজ বারি হে মাস্তি মাস্তি” গান চালালে তাকে ইকামর্স বলা যাবে না।
বরং আপনি যখন এই চায়ের অর্ডারটা অনলাইনে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন, তখন তাকে ইকামর্স বলা যাবে।
ই-কমার্স ব্যবসার বৈশিষ্ট্য
ই-কমার্সে বিক্রেতার পন্য তার ওয়েবসাইট বা তার সোশ্যাল মিডিয়াতে যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে প্রদর্শন করবে এবং ক্রেতা তা থেকে তার পণ্য বেছে বেছে নিবে। যেমন ধরুন আপনি কোন দোকানে গেলেন সেখানে আপনি পণ্যটি কেনার আগে অবশ্যই পন্য টি দেখে নিবেন। ই-কমার্স ব্যবসা তে সেই রকমভাবেই আপনি পণ্যটি কেনার আগে পন্য টি অনলাইনে দেখতে পারবেন।
প্রচলিত দোকানের সাথে ই-কমার্স এর পার্থক্য হচ্ছে প্রচলিত দোকানে পণ্য আপনি সামনাসামনি দেখতে পারবেন এবং ই-কমার্সে পণ্য আপনাকে দেখতে হবে অনলাইনে। ই-কমার্স ব্যবসার আরো একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল ই-কমার্স ব্যবসার পেমেন্ট পদ্ধতি। ই-কমার্স ব্যবসায় আপনি পেমেন্ট পদ্ধতি অনলাইনে করতে পারবেন। অনলাইনে বিভিন্ন রকম পদ্বতি যেমন বিকাশ, রকেট, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পণ্যের দাম পরিশোধ করা যায় ই-কমার্স ব্যবসাতে।
ই-কমার্স এর আরো একটি উল্লেখযোগ্য পণ্য হল ডিজিটাল প্রোডাক্ট। ডিজিটাল প্রোডাক্ট হচ্ছে এমন ধরনের প্রোডাক্ট যার কোন অস্তিত্ব আমরা হাতে অনুভব করতে পারি না কিন্তু আমাদের জীবনে তা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন কম্পিউটারের ক্ষেত্রে সফটওয়্যার কে বলা যায় ডিজিটাল প্রোডাক্ট। বিভিন্ন রকম কোর্স, অনলাইন গেমিং, ই বুক ইত্যাদিকে ও ডিজিটাল প্রোডাক্ট বলা যায়। ডিজিটাল প্রোডাক্ট লেনদেনের ক্ষেত্রে অনলাইন সবচাইতে ভাল মাধ্যম কারণ অনলাইনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ডিজিটাল প্রোডাক্টের লেনদেন করা যায়। ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সবচাইতে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ই-কমার্স।
বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসা
অনলাইনে পরিসংখ্যান সংক্রান্ত বিখ্যাত ওয়েবসাইট statista এর এক প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশ ই কমার্স এর ব্যবসা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিবেদন টি তে আরও বলা হয় যে, বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসা প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে 2023 সালের মধ্যে আশা করা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস এর মধ্যে সমস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ই কমার্স ব্যবসা কিন্তু খুব দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ই কমার্স এর মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসে তার পণ্য ডেলিভারি নিতে পেরেছে ফলে করোনাভাইরাস এর মাধ্যমে মানুষ বাইরে না যেয়েও তার প্রয়োজনীয় পন্য ঘরের মধ্যে ডেলিভারি নিতে পেরেছে। বাংলাদেশে ই কমার্স এর ভবিষ্যত খুব উজ্জ্বল।
দারাজ ইভ্যালি রকমারি সহ আমরা যদি বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফলো করে এবং তাদের বিক্রয় দেখি তবে দেখব যে তা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে অর্থাৎ প্রতিবছর বাংলাদেশে অনেক মানুষ ই কমার্স প্লাটফর্মে আসছে এবং তারা পণ্য বেচাকেনা র সাথে যুক্ত হচ্ছে। তবে এই সংখ্যাটা আরো বেশি হওয়া দরকার।
বর্তমানে বাংলাদেশের খুব অল্প সংখ্যক মানুষ ই কমার্স এর মাধ্যমে পণ্য বেচাকেনা র সাথে যুক্ত আছে। বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষও যদি ই-কমার্স এর মাধ্যমে পণ্য বেচাকেনা সাথে যুক্ত হয় তবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর ই-কমার্স মার্কেট।
বাংলাদেশের ই-কমার্সের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং মানুষের ই-কমার্স ব্যবসার প্রতি আস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। তবে বাংলাদেশে ই-কমার্স মার্কেট হয়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর ই-কমার্স মার্কেট।
ই-কমার্স ব্যবসার গুরুত্ব
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় ই-কমার্স ব্যবসার গুরুত্ব অপরিসীম। ই-কমার্স ব্যবসার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে শুধু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে শুধু কমার্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ এবং বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হতে পারে এবং তারা কর্মসংস্থান অর্জন করতে পারে।
পাশাপাশি ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে। আমাদের সবচাইতে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয় গার্মেন্টস সেক্টর থেকে। গার্মেন্টস সেক্টরের মত যদি প্রণোদনা এবং সুযোগ-সুবিধা আর ট্রেনিং ইত্যাদি যদি ই কমার্স সেক্টরেও দেওয়া হয় তবে একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে ই কমার্স খাত থেকেও বাংলাদেশে খুবই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে এবং তা বাংলাদেশের জন্য একটি রপ্তানিমুখী শিল্প পরিণত হবে।
সুতরাং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং দেশের বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য ই কমার্স সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ই-কমার্স সেক্টরের এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ও ব্যবসা বাণিজ্য বিস্তার লাভ করা যেতে পারে। যেমন গত কয়েক বছর ধরেই প্রান্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের আম চাষিদের মধ্যে অনেকেই তাদের আড়তদারদের কাছে আম বিক্রি না করে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে যেমন ফেসবুক ইত্যাদি ব্যবহার করে তারা তাদের আম বিক্রি করছে। অনলাইন মাধ্যম যেমন ফেসবুক ব্যবহার করে তারা তাদের আম বিক্রি করছে।
ই-কমার্স খাত ব্যবহার করে এই ব্যবসায়ীরা তাদের আম বিক্রির মাধ্যমে একদিকে যেমন তাদের পণ্যের জন্য খুব ভালো দাম পাচ্ছে পাশাপাশি শহর অঞ্চলের মানুষ ফরমালিনমুক্ত খাটি আম খেতে পারছে। যদি ই কমার্সের সম্পর্কে মানুষকে আরো প্রশিক্ষণ এবং সচেতন করে তোলা যায় তা যথাযথ ভাবে পরিচালনা করার জন্য তবে একথা সুনিশ্চিতভাবে বলা যায় যে বাংলাদেশের ব্যবসার বিস্তারে, কর্মসংস্থানে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ই-কমার্স খাত বৈপ্লবিক ভূমিকা পালন করতে পারে।
কেন ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা প্রয়োজন?
যদিও, এই মুহুর্তে ওয়েবসাইট তৈরির প্রয়োজনীয়তা আপনি বুঝে ফেলেছেন। কারণ, ই কমার্স ব্যবসা করবেন কিন্তু ওয়েবসাইট নাই, এটা হাস্যকর। তারপরেও, কিছু মানুষ বলতে পারে ভাইজান, আমি ফেসবুকেতো পণ্য বিক্রি করতে পারছি তাহলে, অযথা, ওয়েবসাইট তৈরি করে টাকা-পয়সা নষ্ট করবো কেন?
তাদের জন্য বলা প্রথমত, ফেসবুক বিজনেসকে এফ কমার্স বলে। e-commerce website in bangladesh লিখে গুগলে সার্চ দিলেই বুঝবেন। যাইহোক তাদের জন্য নিচের আরও কিছু ব্যাখ্যা দেওয়া হল।
নিজস্ব ব্রান্ড আইডেন্টি: আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকা মানে, আপনার একটা ব্রান্ড আইডেন্টি তৈরি হলো। যেমন, মানুষ অ্যামাজন, আলিবাবা কিংবা দারাজের নাম মনে রাখে। কিন্তু, এখন ফেসবুকের কোন শপ পেজটার নাম আপনার মাথায় আসছে বলতে পারবেন?
বিশ্বস্ততা: একটা মানসম্মত ওয়েবসাইট সহজেই কাস্টমারের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারে। কিন্তু, একটা ফেসবুক পেজ এটা সহজে অর্জন করতে পারে না।
পণ্য ডিসপ্লে করার সুবিধা: ওয়েবসাইটে আপনি আকর্ষণীয়ভাবে ক্যাটেগরি অনুযায়ী পণ্য প্রদর্শন করতে পারবেন। গ্রাহক খুব সহজে সার্চ করে কিংবা পছন্দমতো পণ্য খুঁজতে পারবে। এছাড়া, সহজে অর্ডারও করতে পারবে। অনেকটা সুপার-শপের মতো, যদিও এটা সুপার-শপের থেকে উন্নত এবং সহজ।
সহজে মার্কেটিং করা: যারা ফেসবুক বা গুগলে এড দেন। তারা জানেন যে একটি ওয়েবসাইট থাকলে কত সহজে কাস্টমার রি-টার্গেট সহ, দ্রুত বিক্রি বৃদ্ধি করা যায়।
বিক্রি বৃদ্ধি: ওয়েবসাইটে ডিরেক্ট কাস্টমার আসার পাশাপাশি ফেসবুক এবং গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকেও ভিজিটর আসে। গুগল থেকে একদম পারফেক্ট কাস্টমার পাওয়া সম্ভব। যখন একজন মানুষ অনলাইন থেকে নকশি কাঁথা কিনবে কিন্তু, সে জানে না কোথা থেকে কিনবে। তখন সে গুগলে সার্চ করবে। আর গুগলে সার্চ করার পর যদি আপনার ওয়েবসাইট প্রথমে আসে? কি হবে তখন চিন্তা করুন? খুব সহজে একজন কাস্টমার পেয়ে গেলেন? এই কাজটাকে এসইও বলে। আপনার ওয়েবসাইট গুগলের প্রথমে রাখতে চাইলে, এসইও করতে হবে অথবা গুগলে অ্যাড দিতে হবে।
গ্রাহক চাহিদা বোঝা: ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহকদের ডাটা এনালাইসিস করতে পারবেন। গ্রাহক কোন পণ্য বেশি সার্চ করে, গ্রাহক কোন জায়গার, বয়স কত ইত্যাদি আরও অনেক তথ্য জানতে পারবেন।
ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরির ধাপ
কি নিয়ে ব্যবসা করবেন তা আশা করি আগেই ঠিক করে রেখেছেন। এইবার আসি মূল কথায়, ই কমার্স ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করবেন? প্রথমত, বলে রাখা ভাল, আপনি যদি চাই একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপারের মাধ্যমে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন তাহলে, লিংকডইনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
যাই হোক, যাকে দিয়েই ওয়েবসাইট তৈরি করেন না কেন। নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই আপনার জানা থাকা লাগবে।
১. ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয়
ওয়েবসাইট তৈরির একদম প্রথম ধাপ হলো, ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করা। সহজ ভাষায় বলি, ডোমেইন হলে ওয়েবসাইটের নাম, এই যেমন ধরণে, google.com, alibaba.com, daraz.com.bd ইত্যাদি। আর হোস্টিং হল, আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য, পণ্য, পণ্যের ছবি কোথায় রাখবেন, সেই জায়গা। ডোমেইন ও হোস্টিং চাইলে আপনি নিজেই কিনতে পারেন। তবে, এক্ষেত্রে একটু চালাক না হলে, ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ডোমেইন কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে:
- যেই সাইট থেকে কিনছেন তারা বিশ্বস্ত কিনা অর্থাৎ, তারা কত দিন ধরে ব্যবসা করছে। ভবিষ্যততে থাকবে নাকি লোটা-কম্বল নিয়ে পালাবে?
- ডোমেইনের সম্পূর্ণ কন্ট্রোল আপনাকে দিবে কিনা। ভবিষ্যতে তাদের সাইট থেকে অন্য সাইটে ট্রান্সফার করার সুবিধা আছে কিনা। থাকলে, চার্জ কি রকম এবং ডোমেইন ট্রান্সফার অথেনটিকেশন কোড আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে কিনা।
- ডোমেইন লক করা কিনা?
- কোম্পানি কতটুকু বিশ্বস্ত?
হোস্টিং কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে:
- দেশের মধ্যে সাইট চালালে তথা শুধু বাংলাদেশের ভিজিটর হলে বিডিআইক্স সার্ভারের হোস্ট কিনুন।
- কাস্টমার কেয়ারে সাপোর্ট কি রকম?
- ব্রান্ড ইমেইল সুবিধা আছে কিনা?
- সম্পূর্ণ সি-প্যানেল অ্যাক্সেস আছে কিনা?
- কতটুকু জায়গা ও ব্যান্ডউইথ এবং ভবিষ্যতে আপগ্রেড করা যাবে কিনা?
- তাদের আপটাইম কি রকম?
- মানিব্যাক গ্যারান্টি দেয় কিনা?
ইত্যাদি আরও অনেক বিষয় আছে, যাচাই করার। অনেকে বলতে পারেন, বাংলাদেশি কোম্পানি খারাপ, বিদেশি ভাল। সত্যি বলতে বাংলাদেশি অনেক কোম্পানি বিদেশিদের থেকে নিয়ে রিসেল করে। ভাল-খারাপ দেশ-বিদেশ সব জায়গায় আছে। দেশি কোম্পানি হলে সুবিধা হলো, আপনি বিকাশ, রকেট, নগদে পেমেন্ট করতে পারছেন। আর, সাহায্যের প্রয়োজন হলে বাংলা ভাষায় সাহায্যে নিতে পারবেন। আমি কিছু ডোমেইন হোস্টিং সাইট রেফার করছি, যেখান থেকে আমি ডোমেইন হোস্টিং কিনেছি।
ডোমেইন
হোস্টিং
- Hostinger (কম দামে ভাল বিদেশি হোস্টিং চাইলে এটা বেস্ট) Hostinger থেকে ওয়েব হোস্টিং কিনুন ৮০% ডিসকাউন্ট: https://hostinger.com?REFERRALCODE=1AMBEIAKHAT89
- Cloudways (এটা VPS হিসাবে ভাল)
- Namecheap
২. ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট
ডোমেইন হোস্টিং কেনার পরবর্তী ধাপ ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট। এই কাজ আপনি পারলে নিজেই করে নিতে পারেন। না পারলে, একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারেন। যাকে দিয়েই করান, নিচের বিষয়গুলো জানতে হবে। তা না হলে, ওয়েবসাইট বানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
প্ল্যাটফর্ম
একদম প্রথম বিষয় হচ্ছে, আপনি কোন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চাচ্ছেন। বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু প্লাটফর্ম আছে যেখানে ওয়েবসাইট তৈরি করার খরচ অনেক কম এবং পরিচালনাও অনেক সহজ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- উ-কমার্স/ওয়ার্ড-প্রেস
- শপিফাই
- ম্যাজেন্টা
- ওপেন কার্ট
- জেন-কার্ট
এর বাহিরে আপনি একদম স্কেচ থেকে ডিজাইন করতে পারেন। তবে, এই ধরণের ওয়েবসাইট তৈরির খরচ ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয়। এর নিচে সাধারণত, পারফেক্ট সাইট হয় না, আর হলেও আপনার পছন্দমত হবে না। আর এই ধরণের সাইটের সিকিউরিটি থেকে শুরু করে নিয়মিত মেইনটেইনের জন্য একজন এক্সপার্ট রাখতে হবে। মূলত এই ধরণের সাইট অ্যামাজন, আলীবাবা, দারাজের মত কোম্পানিরা তৈরি করেছে। আপনিও চাইলে করতে পারেন যদি বাজেট থাকে।
কিন্তু আপনি যদি সিএমএস ব্যবহার করেন মানে উ-কমার্স/ওয়ার্ড-প্রেস, ম্যাজেন্টা, ওপেন কার্ট, জেন-কার্ট আরকি। তাহলে, খরচ অনেক কম হবে। এক্ষেত্রে আমি বলবো উ-কমার্স তথা ওয়ার্ড-প্রেস ব্যবহারের জন্য। সিএমএস ব্যবহার করে পারফেক্ট সাইট তৈরির খরচ সাধারণত ১৫ হাজার থেকে শুরু হবে।
সিএমএস ব্যবহার করে সাইট তৈরির করার সময় কিছু বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে। যথা:
ওয়েবসাইট থিম
যে ওয়েব ডিজাইনারকে দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করাবেন, তাকে জিজ্ঞাসা করে নিবেন যে সে ফ্রি থিম দিয়ে সাইট তৈরি করে দিবে নাকি পেইড। যদি পেইড থিম হয় তাহলে, কোথা থেকে কিনবে সেটা জেনে নিবেন।
সাধারণত, ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য থিম কেনার জনপ্রিয় এবং ভাল সাইট হল থিমফরেস্ট। পেইড থিমের ক্ষেত্রে থিমফরেস্টের Purchase Code দিয়েছে কিনা এবং ভবিষ্যতে আপডেট পাবেন কিনা তা চেক করে নিবেন।
অনেক সময় প্রতারকরা, মাত্র ১৫০০ বা ৩,০০০ হাজার টাকায় ওয়েবসাইট বানানোর কথা বলে সাইট তৈরি করে দেয়। কিন্তু, তারা সাধারণত, Null বা GPL দিয়ে সাইট বানিয়ে দেয়। GPL এর ক্ষেত্রে কোন আপডেট পাওয়া যায় না ফলে ভবিষ্যতে সাইট ডাউন হয়ে যেতে পারে। আর Null হলে তো আপনি শেষ। ভাইরাস কিংবা অ্যাড স্ক্রিপ্ট যুক্ত থাকে এই ধরণের সাইটে। যেকোনো সময় সাইট হ্যাক হয়ে যেতে পারে কিংবা অযথা অ্যাডও দেখাতে পারে।
কি কি সুবিধা দিবে?
- ওয়েব ডেভেলপার কি পরিমাণ কাস্টমাইজেশন করে দিবে?
- গুগল সার্চ ইঞ্জিনে যুক্ত করে দেয়া ও বেসিক এসইওগুলো করে দিবে কিনা?
- কত মাস সাপোর্ট দিবে?
- আপনাকে মেইটেইন এবং প্রোডাক্ট আপলোড দেয়া শিখিয়ে দিবে কিনা ইত্যাদি।
মোটামুটি এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে সর্তক থাকলেই হবে।
৩. লেনদেন ও পেমেন্ট গেটওয়ে
সাইট তৈরির-পর গ্রাহক পেমেন্ট কিভাবে করবে, সেই ব্যবস্থা করাটা জরুরি। আপনি চাইলে ক্যাশঅন ডেলিভারিরে ব্যবস্থা করতে পারেন। এছাড়া, ডিজিটাল পেমেন্টের পদ্ধতিও রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে, ওয়ার্ড-প্রেসে আপনি বেশি সুবিধা পাবেন। আপনি চাইলে ফ্রি প্লাগিন ব্যবহার করে নগদ, বিকাশ, রকেটে পেমেন্ট নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে গ্রাহককে ম্যানুয়ালি পেমেন্ট করতে হবে।
আপনি চাইলে, পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করতে পারেন। নতুন ই-কমার্সের ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে গেটওয়ে কেনা খুব বেশি জরুরি নয়। তারপরেও নিচে কিছু পেমেন্ট গেটওয়ে দিলাম:
৪. নিরাপত্তা
ওয়ার্ড-প্রেস ওয়েবসাইট হলে, কোড সম্পর্কিত নিরাপত্তার ব্যাপারে ওয়ার্ড-প্রেস নিজেই চিন্তা করবে। আপনাকে অবশ্য চিন্তা করতে হবে, হোস্টিং সিপ্যানেল, ইমেইল, ওয়ার্ড-প্রেস ড্যাশ-বোর্ড লগইন পাসওয়ার্ড নিয়ে। সেক্ষেত্রে, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা। শক্তিশালী পাসওয়ার্ডের উদাহরণ:
মূলত পাসওয়ার্ডে সিম্বল, নাম্বার ও ক্যাপিটাল লেটার ও স্মল লেটারের সমন্বয় রাখাটাই শক্তিশালী পাসওয়ার্ডের উদাহরণ।
এছাড়া, DDoS অ্যাটাক বা সাইট ডাউন হওয়া থেকে রক্ষা করতে সাইটটি Cloudflare এর সাথে ইন্ট্রিগেট করে রাখতে পারেন। আরও কিছু নিরাপত্তার বিষয় আছে, যেগুলো গুগলে বিস্তারিত পাবেন।
এবং হ্যাঁ আমরা প্রফেশনাল ভাবে যে কোন ওয়েবসাইট সুলভ মূল্যে তৈরি করে থাকি। যদি কারো ওয়েবসাইট বানানোর প্রয়োজন হয়। তাহলে আজি যোগাযোগ করুন। আমরা ১ বছরের ফ্রি সার্ভিস দিয়ে থাকি। শর্ত প্রযোজ্য।
WhatsApp +88 01756 475621
আপনি কি ওয়েবসাইট বানাতে চান? Nurul Academy নিয়ে এসেছে নিজের ওয়েবসাইট নিজেই বানানোর কোর্স। কোর্সের নাম হচ্ছে Complete E-commerce Website Development Course. Link click here